স্টাফ রিপোর্টারঃ
সিলেট থেকে নিখোঁজ হওয়া শিশু ফরহাদ (১৪) কে জগন্নাথপুরে উদ্ধার করার পাশা-পাশি অপহরণকারী সানুর (২৮) কে আটক করে শিশুর পরিবার ও পুলিশ এর নিকট হস্তান্তর করেছেন স্থানীয় জনতা।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২৮ শে অক্টোবর সকাল প্রায় ৮ ঘটিকার সময় সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া বাজারে এই উপজেলার খিদীরপুর গ্রাম নিবাসী মৃত উমর আলীর ছেলে চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য সানুর মিয়া(২৮) এর সাথে অপরিচিত একটি শিশুকে অসহায় অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয় জনতা সানুর মিয়া (২৮) কে ও শিশুকে আটক করে কলকলিয়া বাজার বনিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মনসুর মিয়ার নিকট হস্তান্তর করেন। পরে মনসুর মিয়া এই শিশুকে সভাপতি আলী হোসেন ও সাধারন সম্পাদক ফখরুল ইসলাম এর নিকট হস্তান্তর করেন। এসময় অপহরণ এর শিকার শিশুটিকে নাম -ঠিকানা জিজ্ঞাসা করা হলে সে জানায়, তার নাম ফরহাদ মিয়া। সে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত চানপুর গ্রাম নিবাসী বর্তমানে সিলেট শহরের নবাব রোডস্থ বারি মঞ্জিলে বসবাসকারী জিলু মিয়ার ছেলে শামীমাবাদ আল মনাফ স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সে আরো বলে বিগত ২৬ শে অক্টোবর দিবাগত রাতে এই ব্যক্তি অর্থাৎ সানুর মিয়া (২৮) তাকে তাদের বাসার পার্শ্ববর্তী দোকান এর সামন থেকে জোরপূর্বক গাড়ীতে তুলে নিয়ে এসেছে। চেচামেচি করলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেছে। তাই সে ভয়ে কারো কাছে কিছু বলার সাহস পায়নি। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শিশু ফরহাদ মিয়া তার বাসার মোবাইল নাম্বার বলে। নাম্বার অনুযায়ী বাজার কমিটির সদস্য পল্লী চিকিৎসক মিজানুর রহমান ফোন দিলে ফরহাদ মিয়ার বাবা-মা সহ আত্মীয় স্বজন কলকলিয়া বাজারে আসেন এবং ছেলেকে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তৎক্ষনাৎ খবর পেয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে এবং অপরণকারী সানুর মিয়া (২৮) ও অপহরণ এর শিকার শিশু ফরহাদ মিয়া (১৪) কে থানায় নিয়ে গেছেন। শিশু ফরহাদ ও অপহরণকারী সানুর মিয়া (২৮) বর্তমানে জগন্নাথপুর থানা হেফাজতে রয়েছে। শিশুর বাবা-মাও থানায় আছেন।
এ ব্যাপারে কলকলিয়া এলাকার একাধিক ব্যক্তি তাদের অভিপ্রায় ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, সানুর মিয়া একজন চিহ্নিত চোর চক্রের সক্রিয় সদস্য। এক প্রশ্নের জবাবে তারা আরো বলেন, সে একজন মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারী। তার পক্ষে চুরি,ছিনতাই ও অপহরণ সহ যেকোনো ধরনের অপকর্ম করা সম্ভব। তাকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি প্রদান করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে অপহরণ এর শিকার শিশু ফরহাদ মিয়ার পিতা জিলু মিয়া ও মাতা বিংরাজ বিবি একান্ত আলাপকালে বলেন, স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় বুকের ধন ছেলেকে ফিরে পেয়েছি। সবার নিকট আমি চিরকৃতজ্ঞ। অপহরণকারী কুলাঙ্গার আমার ছেলেকে অপহরণ করে নিয়ে এসেছে। আমার এর দৃষ্টান্ত মূলক বিচার চাই।
এ ব্যাপারে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী জগন্নাথপুর থানার এসআই অপূর্ব একান্ত আলাপকালে দৈনিক আজকের বসুন্ধরা পত্রিকাকে বলেন, অপহরণ এর শিকার শিশু ফরহাদ মিয়া ও অপহরণকারী সানুর মিয়া (২৮) থানা হেফাজতে আছে। এই বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি আছে। তাই বিষয়টি কোতোয়ালি থানা পুলিশকে অবহিত করেছি। তাদেরকে সেখানে হস্তান্তর করা হবে। আইনী বিষয় প্রক্রিয়াধীন আছে।
উল্লেখ্য,২৬ শে অক্টোবর দিবাগত রাত ৯ ঘটিকার সময় মায়ের জন্য সুপারি ও নিজের জন্য কলম ক্রয়ের উদ্দেশ্য বাসা থেকে বের হয়ে আর বাসায় ফিরেনি। পরিবারের লোকজন সম্ভাব্য সকল জায়গায় খোঁজা খোঁজি করে তার সন্ধান না পেয়ে ২৭ শে অক্টোবর সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করেন ফরহাদ মিয়া (১৪) এর পিতা জিলু মিয়া এবং বিভিন্ন মিডিয়ায় নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশিত হয়।