জগন্নাথপুরে বোরোধান কাটা প্রায় শেষ, বাম্পার ফলনে কৃষক-কৃষাণীর মূখে হাসি 

প্রকাশিত: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ, মে ৪, ২০২৪

জগন্নাথপুরে বোরোধান কাটা প্রায় শেষ, বাম্পার ফলনে কৃষক-কৃষাণীর মূখে হাসি 
হুমায়ূন কবীর ফরীদি ##
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জগন্নাথপুরের সবকটি হাওরের প্রায়  ৯৭ ভাগ বোরধান কাটা শেষ হয়েছে। কাটার বাকী যা রয়েছে তাও কাল পরশু’র মধ্যে  কাটা শেষ হয়ে যাবে। কিছুধান শুকানোর জন্য খলায় থাকলেও তাও দু-তিন দিনের মধ্যে ঘোলায় তুলতে পারবেন। এবারের বাম্পার ফলনে কৃষক -কৃষাণীর মূখে আনন্দের হাসি ঝিলমিল করছে।
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার বৃহত নলুয়ার হাওর, মইয়ার হাওর ও ফিংলার হাওর সহ ১৫ টি ছোট-বড় সবকটি হাওরের প্রায় ৯৭ ভাগ বোরোধান কাটা শেষ হয়েছে। আর কাটার বাকী যে ৩ ভাগ ধান রয়েছে তা এক /দুই দিনের মধ্যে কাটা শেষ হয়ে যাবে। কিছু ধান শুকানোর জন্য খলায় ছড়ানো থাকলেও, তাও দু-তিন দিনের মধ্যেই ঘোলায় তুলতে পারবেন কৃষক পরিবার। অন্যান বছরের তুলনায় এবার এই সকল হাওর গুলোতে বাম্পার ফলন হয়েছে সোনালী ফসল বোরোধান এর। এতে কৃষক – কৃষাণীর মূখে আনন্দের হাসি ঝিলমিল করছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বারতি চাপ ছাড়াই  সোনালী ফসল ঘরে তুলতে পেরে আনন্দিত কৃষক পরিবার।
 ৪ঠা মে রোজ শনিবার  হাওর ঘুরে দেখা যায় ও জানাযায়, আবহাওয়া অনুকূলে  থাকায় আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দেওয়ায় এবং শ্রমিক সংকট না থাকায় ধান কাটার শ্রমিক ও মেশিনের মাধ্যমে বৈশাখ মাস শেষ হতে না-হতেই দ্রুত ধান কাটা সম্ভব হয়েছে। আর কাঠফাটা রোদে ধান শুকিয়ে ঘোলায় তুলেছেন কৃষকেরা। কিছু ধান শুকানোর জন্য খলায় ছড়ানো হয়েছে। খলায় ছড়ানো ধান আর ধান রোদে শুকিয় বস্তাবন্দি করে ঘোলায় তোলা হচ্ছে।  ধানের রোপণ থেকে শুরু করে ধান কাটা পর্যন্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,   উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ, পরামর্শ  আর সার্বিক সহযোগিতায়  এবার উপজেলার ছোট-বড় হাওরের প্রায় ১৪ হাজার ৩ শত ৮৫ হেক্টর জমিতে বোরোধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও বেশী হয়েছে।  এতে উৎপাদনে সরকারি লক্ষ্য মাত্রা ১ লাখ ২৮ হাজার ১শত ২০ টনের কম হলেও তা ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও আগাম বন্যা থেকে হাওরের  ফসল রক্ষায় মানসম্মত বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বেড়িবাঁধ এর কাজ ভাল হওয়ায় কৃষকদের সন্তোষ বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার হাওর পাড়ের কৃষক  জয়নাল আবেদীন, জহিরুল, আকিল, সুমন, রাসেদ সহ একাধিক কৃষক একান্ত আলাপকালে বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ফলন ভাল হয়েছে। ধান কাটার শ্রমিক আর মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটার পাশা-পাশি  রোদে শুকিয়ে দ্রুত শুকিয়ে ঘরে তুলেছেন। হাওরের ধানকাটা প্রায় শেষ হয়ে গেছে। কিছু জমি কাটার বাকি আছে। শিলা বৃষ্টি না হলে সেসব ক্ষেতের ধান সুন্দর মতো কেটে আনা যাবে।এখন মূলত শিলা বৃষ্টি আর বজ্রপাতই বড় হুমকি। ধানের ভাল ফলন হয়েছে। তবে ব্লাষ্ট রোগের কারণে ব্রি- ২৮ এবং বঙ্গবন্ধু জাতের ধান রোপণ করে অনেক  কৃষক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলার সবকটি হাওরের প্রায় শতভাগ ধান কাটা শেষ হয়েছে। খলায় ধান শুকানোর পাশাপাশি ঘোলায় তুলেছেন কৃষক কূল। আবার অনেকে ধান শুকিয়ে ঘোলায় তুলেছেন। তবে কিছু উঁচু জমিতে এখনো ধান কাটা চলার পাশাপাশি মাড়াই চলছে। এবং সাথে সাথে শুকিয়ে ঘোলায় তুলেছেন কৃষক পরিবার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকেরা দ্রুত সময়ের মধ্যে ধান কর্তন করে ঘোলায় তুলেছেন ও তুলতে সক্ষম হয়েছেন। জগন্নাথপুরে বোরোধান উৎপাদনে সরকারি  লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ২৮ হাজার ১শত ২০ টন হলেও আশা করছি এবছর লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কেননা বোরোধান এর বাম্পার ফলন হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ