প্রকাশিত: ৮:৩৮ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৯, ২০২২
ইউএস বাংলা ডেস্কঃ আসন পুনর্নির্ধারণের কথা ভাবছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে ডিন’স কমিটির জরুরি সভাও হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সব মিলিয়ে হাজারখানেক আসন কমতে পারে। শিক্ষকরা মনে করছেন পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়টি যৌক্তিক।

গত ১ ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবকাঠামোগত মহাপরিকল্পনার আগে একাডেমিক মহাপরিকল্পনা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। সে সূত্রেই আসন কমানোর কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, প্রায় এক হাজার আসন কমানোর কথা ভাবছে কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে ভাষাবিজ্ঞান, উর্দু, আরবি, সংস্কৃত, ফার্সি, ইসলামিক স্টাডিজসহ কিছু বিভাগে উল্লেখযোগ্য হারে আসন কমতে পারে বলে সূত্র জানায়।
শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. আবদুল হালিম বলেন, ‘আসন সংখ্যা এমনভাবে বাড়িয়ে রাখা হয়েছে যে, সেখানে থেকে বেরিয়ে আসা কষ্টকর। আমার ইনস্টিটিউটে আগে ৬০ জন ভর্তি হতো। ২০০৯ সালে সেন্ট্রালি ভর্তি পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর আসন বেড়ে কোটাসহ শিক্ষার্থী দাঁড়িয়েছে ১৬৭ জনে। তিন গুণ শিক্ষার্থী বাড়লেও শিক্ষক ও অবকাঠামো কিন্তু বাড়েনি। একটা কোর্স একজন শিক্ষককে তিন ভাগে পড়াতে হচ্ছে। আমরা সংখ্যাটা কমিয়ে ৮০ করতে চাচ্ছি।’
এর মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা সংকুচিত হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখনও ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, ১০০টির মতো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সবাই আনুপাতিক হারে শিক্ষার্থী নেবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলা না থাকার পরও শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারছে না। চার জনের রুমে ১০-১৫ জন থাকছে। শুধু ভর্তি নিলেই হবে না, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ দিতে হবে। একটি শ্রেণিকক্ষে ২০০ জনের ক্লাস হলে শিক্ষক কয়জনকে চিনবেন? কীভাবে গাইড করবেন? শিক্ষার কোয়ালিটি নিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য। কোয়ানটিটি কমানো মানে উচ্চশিক্ষার অধিকার খর্ব করা নয়।’
ঢাবির নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. জোবাইদা নাসরীন বলেন, “কিছু কিছু বিভাগ আছে অনেক শিক্ষার্থী। তাদের প্রায়োগিক ক্ষেত্রও আছে। আবার কিছু বিভাগ আছে যাদের শিক্ষার্থী দুইশ’ কিন্তু থাকা উচিত ৫০ জন। আমার মনে হয় এতে সামঞ্জস্য দরকার।”
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কাঠামোতে একসঙ্গে দুইশ জনকে পাঠদান করা সম্ভব নয়। ক্লাসে ঠাসাঠাসি করে বসা, শেষ শিক্ষার্থী পর্যন্ত শিক্ষকের কথা না পৌঁছানো, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ; বিশ্বের কোনও বিশ্ববিদ্যালয় শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে এভাবে ক্লাস হয় না। অবকাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। বর্তমান কাঠামোর ধারণক্ষমতা নেই।’
আসন কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন ও ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম রাকিব। অপরদিকে বিষয়টিকে উচ্চশিক্ষার সঙ্কোচন বলে মনে করছে ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদ) ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান আবাসন সক্ষমতা, একাডেমিক পরিসর, ল্যাব ফ্যাসিলিটিজ এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ও গবেষণার সুবিধা বিবেচনায় শিক্ষার্থী বেশি। অপরিকল্পিতভাবে কিছু বিভাগ খুলে সেগুলোতে ভর্তি করানো হয়েছে। তাই শিক্ষার্থী কমানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে সেটা একাডেমিক মহাপরিকল্পনার আলোকে করা উচিত।’
রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘বেশ কিছু বিভাগে আসন কমানোর প্রয়োজন রয়েছে। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে আমরা একমত।’
সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘আসন কমানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক এবং শিক্ষার দর্শনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে অবকাঠামো সংকটের কারণে আসন কমানো হচ্ছে। অপরদিকে তারা কিন্তু নাইটকোর্স চালু রাখছে। সাধারণ শিক্ষার্থী না বাড়িয়ে বাণিজ্যিক কোর্সগুলো কীভাবে বাড়ানো যায় সেটা নিয়ে নীতিমালা করছে। এটা দ্বিচারিতা।’
অবকাঠামো না থাকলে সেটা নিশ্চিত করে শিক্ষার্থীদের পড়ানোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, এর মাধ্যমে বিজ্ঞান, কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানের বেসিক সাবজেক্টগুলো কমিয়ে ফেলা হবে। চাকরির কথা বলে বিষয়গুলো ছেঁটে ফেলার সুদূরপ্রসারী ফল ভালো হবে না।’
খবরটি ভাল লাগলে লাইক এবং শেয়ার করবেন।
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and Developed by Web Nest