ছাতকে নির্মাণ হচ্ছে দূর্বিণ শাহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র

প্রকাশিত: ১০:০২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২২

ছাতকে নির্মাণ হচ্ছে দূর্বিণ শাহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র

ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ ছাতকে জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহর নামে হবে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। সেখানে চর্চা হবে তাঁর সৃষ্টিকর্ম নিয়ে। সম্প্রতি সারাদেশের ২১ জন মনীষীর নামে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয়।

সেখানে তাদের সৃষ্টিকর্ম নিয়ে চর্চা হবে। নিজ জন্মস্থানে হবে এসব সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এই ২১ জন মনীষীর মধ্যে ছাতকের রয়েছেন জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহ। ওই সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ফলে বাউলদের জীবনকর্ম, সৃষ্টিচর্চা ও গবেষণা হবে।

১৯২০ সালের ২রা নভেম্বর (১৩২৭ বঙ্গাব্দের ১৫ কার্তিক) তৎকালীন সিলেট জেলার সুনামগঞ্জ মহকুমার ছাতক থানার নোয়ারাই গ্রামের তারামনি টিলায় জন্মগ্রহণ করেন। এই তারামনি টিলা কালান্তরে দুর্বীন টিলা নামে পরিচিত হয়। তার রচিত অধিকাংশ গানে সুফি ও মরমিবাদ স্পষ্টভাবে ফুটে উঠলেও এসবের বাইরেও তিনি ভিন্ন মেজাজের অসংখ্য গান লিখেছেন।

তিনি ১৯৬৭ সালে প্রবাসী বাঙালিদের আমন্ত্রণে ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন। তার অন্যতম সফর সঙ্গী ছিলেন বাউলসাধক শাহ আবদুল করিম।

সেখানে দুর্বীন শাহের গানের কথা ও সুরে বিমোহিত হয়ে সঙ্গীত প্রেমীরা তাকে ‘জ্ঞানের সাগর’ উপাধিতে ভূষিত করেন। মাত্র সাত বছর বয়সে বাবাকে হারান এই বাউলসাধক। ১৯৪৬ সালে সুরফা বেগমের সঙ্গে বিয়ে হয় তার।

তার রচিত গান গুলোর কয়েকটি হল – নির্জন যমুনার কূলে বসিয়া কদম্বতলে, আমার অন্তরায় আমার কলিজায়সুখের নিশি প্রভাত হলো উদয় দিনমণি, শমন লইয়া পিয়ন খাড়া আর কত দিন দেরি, ছাড়িয়া যাইও না বন্ধু রে, পরদেশীরে দূর বিদেশে ঘর, নব যৌবন আষাঢ় মাসে, তোমার মতো দরদী কেউ নাই, বন্ধু যদি হইতো নদীর জল

বিখ্যাত এই বাউলসাধক ৫৭ বছর বয়সে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ৩ ফাল্গুন, ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

কনকচাঁপা খেলাঘর আসর ছাতক শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেতকী রঞ্জন আচার্য্য বলেন, দেশের একজন মরমী গীতিকবি জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহের নামে এখানে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাউল সাধক সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবে।

সিনিয়র সংগীত শিল্পী আবুল বশর বলেন, বাংলা লোক সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষ্যকার জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহ ছিলেন এই অঞ্চলের গর্ব। এই বাউল সাধকের কারনে এ অঞ্চলের পরিচিতি দেশ-বিদেশে। সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের ফলে তার জীবন দর্শন, বাউলদের তথ্য ও গবেষণা এখানের সংস্কৃতি প্রেমীদের অনুপ্রেরণা যুগাবে।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল কর্মকর্তা আহমেদ মঞ্জুরুল হক চৌধুরী বলেন, সারাদেশের ২১ জন মনীষীর নামে সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলার বৈষ্ণব কবি রাধারমণ দত্ত, জ্ঞানের সাগর দূর্বিণ শাহ ও বাউল সম্রাট আব্দুল করিমের নিজ জন্মস্থানে হবে এসব সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ