প্রকাশিত: ২:১৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২২
ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য সুখবর আসছে। নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তি (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার-এমপিও) আগামী এক মাসের মধ্যেই সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। গত অক্টোবরে আবেদন করার পর এমপিও পেতে অপেক্ষা করছেন সারাদেশের আট হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ৯০ হাজার বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী। যদিও আবেদনকারী সব প্রতিষ্ঠানকেই এমপিওভুক্ত করা হবে না।

প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলিয়ে প্রায় তিন হাজারের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এই দফায় এমপিওভুক্ত করা হতে পারে। এই তিন হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে নতুন প্রতিষ্ঠান অন্তত এক হাজার আটশ’র কাছাকাছি। বাকিগুলো পুরোনো প্রতিষ্ঠান। তবে এমপিওভুক্তির স্তর পরিবর্তিত হবে তাদের।
নতুন এমপিওভুক্তির ঘোষণা কবে দেওয়া হবে-জানতে চাইলে এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) ফৌজিয়া জাফরীন গতকাল শনিবার বলেন, ‘আমাদের কাজ (যাচাই-বাছাই) শেষ পর্যায়ে। সামান্য কিছু কাজ বাকি। কয়েকটি তথ্য পেতে বাকি আছে। সেগুলো পেলে আমাদের কাজ শেষ হবে। আমরা দ্রুত চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘আশা করছি ফেব্রুয়ারির শেষে অথবা মার্চের শুরুতে হয়তো ঘোষণা দেওয়া হবে।’
তিন বছর পর এবার আবারও নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হচ্ছে। একইসঙ্গে দেওয়া হবে স্তর পরিবর্তনের এমপিও। গত ১০ অক্টোবর থেকে অনলাইনে আবেদন নেওয়া শুরু হয়। ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ ছিল। এমপিওভুক্তির জন্য প্রায় ৮ হাজার আবেদন জমা হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি স্তরের ৫ হাজারের মতো প্রতিষ্ঠান। বাকি ৩ হাজার কারিগরি, ভোকেশনাল ও মাদ্রাসার আবেদন। বর্তমানে আবেদনগুলোর শেষ পর্যায়ের যাচাই-বাছাই চলছে। যাচাই-বাছাইয়ে প্রাথমিক তালিকায় স্থান পাওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে জেলা পর্যায় থেকে প্রশাসনের (জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের) মাধ্যমিক তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নতুন শিক্ষা সচিব যোগদান করায় মাঝে কিছুটা বিলম্ব হলেও এখন জোরেশোরে চলছে এমপিওভুক্তির কাজ।
গত বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপর ৭ নভেম্বর এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। একই সঙ্গে এ কমিটিকে সহায়তা করতে আরও চার সদস্যের একটি উপকমিটিও গঠন করা হয়।
দেশে এখন পর্যন্ত এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। এমপিওভুক্ত হয়নি এখনও প্রায় ৭ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।
এমপিওভুক্ত হওয়া বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে মাসে বেতনের মূল অংশ ও এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া আর ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা সরকার থেকে পেয়ে থাকেন। এর বাইরে দুই ঈদে শিক্ষকরা মূল বেতনের ২৫ শতাংশ আর কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ উৎসব ভাতা পান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মুহূর্তে সারাদেশের আট হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অর্ধেক নতুন, বাকিগুলোর স্তর পরিবর্তনের এমপিওর জন্য আবেদনের অপেক্ষায়। নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাধ্যমিক পর্যন্ত, মাধ্যমিক বিদ্যালয় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত এবং উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ডিগ্রি পর্যন্ত এমপিওভুক্ত হওয়াকে শিক্ষা প্রশাসনে ‘স্তর পরিবর্তন’ বলা হয়।
সারাদেশে এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকদের সংগঠন ‘নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনে’র সভাপতি ও খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গায় অবস্থিত খুলনা আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার গতকাল সমকালকে বলেন, আমরা চাই কোনো নীতিমালার বিবেচনায় নয়, মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হোক। শিক্ষামন্ত্রী বলেছিলেন, প্রতি বছর এমপিও দেওয়া হবে। ২০১৮ সালের ২৯ আগস্ট সর্বশেষ এমপিওর আবেদন নেওয়া হয়েছিল। এরই মাঝে পার হয়ে গেল ৪টি বছর। এতদিন পর পর এমপিও দেওয়া হলে বহু প্রতিষ্ঠানের অপেক্ষার পালা কেবল বাড়তেই থাকে।
জানা গেছে, এ বছর এমপিওভুক্তি পেতে গেলে নতুন এমপিও নীতিমালার (২০২১) শর্ত প্রযোজ্য হবে। এ নীতিমালা অনুসারে নিম্ন মাধ্যমিক স্তরের (ষষ্ঠ-অষ্টম) বিদ্যালয় এমপিওভুক্তি পেতে শহর ও মফস্বলের নূ্যনতম ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে যথাক্রমে ১২০ ও ৯০ জন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ষষ্ঠ-দশম) ক্ষেত্রে শহর ও মফস্বলে এ সংখ্যা যথাক্রমে ২০০ ও ১৫০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ) তা ৪২০ ও ৩২০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে (একাদশ ও দ্বাদশ নূ্যনতম ছাত্রছাত্রী থাকতে হবে শহরে ১৮০, মফস্বলে ১৪০ জন। স্নাতক (পাস) কলেজে এই সংখ্যা যথাক্রমে ৪৯০ ও ৪২৫ জন, বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখাসহ। একইভাবে এমপিওভুক্তি পেতে পাসের হারের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হার নির্ধারণ করা হয়েছে এবার।
সুত্রঃ সমকাল
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and Developed by Web Nest