প্রকাশিত: ১০:৪৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টারঃ
জগন্নাথপুরের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর ক্ষতিসাধন ও সুপারিন্টেন্ডেন্ট এর বিরুদ্ধে এই প্রতিষ্ঠানের বহিস্কৃত শিক্ষক দীপু বৈদ্য গং ব্যক্তি বর্গ কর্তৃক কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দিয়ে ষড়যন্ত্র মূলক মানববন্ধন ও মিছিল করানোর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অত্র প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মোঃ তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু।
বিবৃতিতে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর প্রতিষ্টাতা পরিবারের সদস্য যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু বলেন, আমাদের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্টালগ্ন হতে সুনামের সহিত শিক্ষার্থীদের পাঠদান অব্যাহত রয়েছে। এমনকি এসএসসি পরীক্ষায় ভাল ফলাফল করে আসছে। সম্প্রতি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর অর্থাৎ হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর শিক্ষক দীপু বৈদ্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এতে এই শিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে ক্ষতিপয় কুচক্রী মহলের ইন্ধনে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর সার্বিক ক্ষতিসাধন ও সুপারিন্টেন্ডেন্ট শাহজাহান মাহমুদ এর মানহানি করার লক্ষে দীপু বৈদ্য তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান “এডিএস একাডেমি ” নামক কোচিং সেন্টারে প্রাইভেট পড়ুয়া হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর কোমলমতি ১৪/১৫ শিক্ষার্থীদের ভূল বুঝিয়ে চলতি ২০২৫ সালের ২২ শে জুন মিথ্যা-বানোয়াট ষড়যন্ত্র মূলক মানববন্ধন ও মিছিল করায়। তবে মানববন্ধনে ও মিছিলে অংশ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাদের ভূল বুঝতে পেরে ঘটনার পরদিন ২৩ শে জুন স্বেচ্ছায় ক্লাসে ফিরে। এমনকি কথিত শিক্ষক দিপু বৈদ্য চলতি ২০২৫ সালের ২২ জুলাই হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর অফিসকক্ষে তার পরিবারের কিছু লোক, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের সদস্য ও শিক্ষকবৃন্দের উপস্থিতে তার (দীপু বৈদ্য) অপকর্মের দায় স্বীকার করে লিখিতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু আরো বলেন, যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে অপপ্রচার চালানো হয়, সেই গ্রুপ তার দ্বারা সৃষ্টি করা হয় বলে দিপু বৈদ্য স্বীকারুক্তি দেন এবং কারা কারা তার পিছনে ছিলেন তিনি তাও বলেন। আমরা এখন জানি আমাদের এ প্রতিষ্ঠানের ক্ষতির জন্য কারা কারা কাজ করতেছেন। এলাকাবাসী সাথে থাকলে এই কতিপয় অশিক্ষিত লোক আমাদের কিছু করতে পারবে না। অশিক্ষিত কিছু রাজনৈতিক এবং সামাজিক ব্যক্তি যারা এ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কাজ করছেন উনারা উনাদের বাচ্চাদের হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে পড়াচ্ছেন। এই প্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের সুপারিন্টেন্ডেন্ট যদি এতই খারাপ হয় তাহলে উনারা কেন উনাদের বাচ্চাদের এ প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেন। আমরা দিপু বৈদ্যকে ক্ষমা করে দিয়েছি। তিনি তাঁহার প্রতিক্রিয়ায় আরো বলেন, অত্যন্ত দুঃখের ও উদ্ধিগ্নের বিষয় হলো, ষড়যন্ত্র করার জন্য যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছিল, সেই গ্রুপের কিছু এডমিন, কিছু সদস্য যারা এই প্রতিষ্ঠানের নন। এমন কিছু লোককে এডমিন করা হয়েছে, যে ব্যক্তি তার নামটি টিকমত লিখতে পারবে না।
যেহেতু বিষয়টি ছিল শাহজাহান মাহমুদ, দিপু বৈদ্য, ১৪/১৫ জন ছাত্র/ছাত্রী এবং স্কুলের বিষয়। তাহলে দিপু বৈদ্য ও ছাত্র ছাত্রীদের গ্রুপে বাহিরের লোক এডমিন ও সদস্য হয় কিভাবে? এখানে তাদের কি স্বার্থ? দিপু বৈদ্য ও ছাত্র/ছাত্রী ছাড়া এডমিন ও সদস্য হিসেবে গ্রুপে যারা আছেন, তাদের কর্তৃক যাতে কোমলপ্রাণ ছাত্রীরা ভবিষ্যতে নিরাপত্তা ঝুঁকিতে না পড়ে সেজন্য আমরা যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছি। তিনি আরো বলেন, এই ঘটনার নেপথ্যে দেশি বিদেশী কিছু ষড়যন্ত্রকারীদের মধ্য হতে অনেককে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু আমরা স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের এই বিষয়টি পজিটিভলি দেখছি।
কারণ তাদের এই ষড়যন্ত্র, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিরোধী চিন্তাধারা হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের কর্তৃপক্ষকে ভবিষ্যতে আরো সতর্কতার সাথে কাজ করতে সাহায্য করবে। কলকলিয়া বাসীর উদ্দেশ্যে তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু বলেন, হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা জানিয়ে দিতে চাই, এই প্রতিষ্ঠানটিতে আমাদের কোন ছেলে মেয়ে লেখাপড়া করে না, ভবিষ্যতে ও করবে না। এই প্রতিষ্ঠান আপনাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করানোর জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তাই আপনারা যেভাবে প্রতিষ্ঠানটির পাশে আছেন, সেজন্য আমরা আপনাদের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ । আশা করি ভবিষ্যতেও আপনারা আমাদের পাশে থাকবেন। ২০১৭ সালে আমাদের শ্রদ্ধেয় পিতা, কলকলিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জনাব আলহাজ্ব সাজ্জাদুর রহমান সাহেব জগন্নাথপুরে কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রয়াত আলহাজ্ব সাজ্জাদুর রহমান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্যবৃন্দ যথাক্রমে আমার মা জনাবা ছায়ারুন নেছা, আমি তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু, আমার ভাই তারিকুল আম্বিয়া অপু এবং আমার বোন লুৎফা জিলু’র অর্থায়নে অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে।
২০১৯ সাল থেকে আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন প্রকার ভর্তি ফি, মাসিক ফি নেই না।
সারা বিশ্বে কারিগরি শিক্ষার ব্যপক চাহিদা। তাইতো আমরা ২০২৫ সাল থেকে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি ( প্রি ভোকেশনাল) শিক্ষাক্রম চালু করেছি। যাতে অত্রাঞ্চলের শিক্ষার্থী ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকেই কারিগরি শিক্ষা লাভ করতে পারে। এখন আমরা ৬ষ্ট থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নিচ্ছি । অচিরেই হয়তো এইচ এস সি পর্যন্ত উন্নীত করা হবে।
শিক্ষার্থীদের কষ্টের কথা চিন্তা করে, আমরা এসএসসি (ভোক) পরীক্ষা কেন্দ্রের অনুমোদন নিয়েছি। ইতোমধ্যে ২০২৫ সালের এসএসসি (ভোক) পরীক্ষার্থীরা অত্র প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা কেন্দ্রে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।
উল্লেখ্য যে, অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষাথীরা পূর্বে প্রায় ৩৫ কি:মি: দূরে সুনামগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে এসএসসি ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিত। যা তাদের শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক সমস্যার বিরাট বড়ো একটি অংশ ছিল। আমরা শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় উৎসাহ -উদ্দীপনা প্রদানের নিমিত্তে ২০১৯ সাল থেকে ❝ আলহাজ্ব সাজ্জাদুর রহমান ও ছায়ারুন নেছা মেধাবৃত্তি ❞ ট্রাষ্টের মাধ্যমে কৃতি শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি দিয়ে আসছি। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এইচএসসি (ভোক) অর্থাৎ কলেজ শাখা অনুমোদনের নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন।
তাই আমরা আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারি যে, জগন্নাথপুরে কারিগরি শিক্ষার বাস্তবায়ন ও উন্নয়নের স্বার্থে ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানকে আমরা কলেজ শাখায় উন্নিত করার চেষ্টা করব। বিধায় আমরা আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা ও সহযোগিতা চাই। আমরা সবার সহযোগীতা নিয়ে সকল প্রকার ষড়যন্ত্রকে পেছনে ফেলে হাজী রঙ্গুম আলী আটপাড়া টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের মাধ্যমে অত্র এলাকার শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যেতে চাই। কলকলিয়ার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সামাজিক ও সকল প্রকার উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও যাব ইনশা-আল্লাহ ।
US BANGLA BARTA is proudly powered by WordPress