ছাতকে অতর্কিত হামলায় যুবক আহত, আদালতে মামলা দায়ের

প্রকাশিত: ৪:২০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২০, ২০২২

ছাতকে অতর্কিত হামলায় যুবক আহত, আদালতে মামলা দায়ের

হুমায়ূন কবীর ফরীদি ##

ছাতকের পল্লীতে পারিবারিক দ্বন্দ্বের জেরে অতর্কিত হামলার ঘটনায় দুলাল মিয়া (২৮) নামক এক যুবক গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত যুবক আদালতে মামলা  দায়ের করেছেন।

মামলা সুত্র ও বাদীর ভাষ্যমতে জানাযায়, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলাধীন ১৩নং ভাতগাঁও ইউনিয়ন এর অন্তর্ভুক্ত গোয়াসপুর গ্রাম নিবাসী মৃত হাজী মদরিছ আলীর ছেলে দুলাল মিয়া(২৮) প্রায় আট বছর মালয়েশিয়া  ও শফিক মিয়া ওমান প্রবাসে প্রায় ১০ বছর থাকাকালীন সময়ের চাকুরির টাকা ও প্রায় ১৫ বছর যাবৎ বিল্লাল মিয়া প্রবাসে থেকে চাকুরী করে পাঠানো টাকার হিসাব-নিকাশ, গরুর খামার ও জায়গা- জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আপন ভাই সুদের ব্যবসায়ী রফিক মিয়া(৪৫) এর সাথে দুলাল মিয়া(২৮) এর দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এরই জের ধরে বিগত ১০ ই জুলাই দিবাগত রাত প্রায় সাড়ে এগারো ঘটিকার সময় রফিক মিয়া সহযোগীদের নিয়ে দুলাল মিয়াকে মারপিঠ করেন। পরদিন অর্থাৎ ১১ ই জুলাই  দুলাল মিয়া ছাতক থানায় উপস্থিত হয়ে তার আপন ভাই রফিক মিয়া (৫৫), গোয়াসপুর গ্রাম নিবাসী মৃত হাফিজ উল্লাহর ছেলে মুক্তি মিয়া(৪৫), শক্তিয়ারগাঁও গ্রাম নিবাসী মৃত জাহির আলীর ছেলে  লিটন ওরফে ফকির আলী(৩৫) ও মৃত হরমুজ আলীর ছেলে আমরু মিয়া(৪৭)কে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেন।এরপর রাত প্রায় ১২ ঘটিকার সময় থানা থেকে বের হয়ে সিএনজি যোগে বাকীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়ে গভীর রাত প্রায় ৩টা ৫০ মিনিটের সময় নিজ বাড়ীর পার্শ্ববর্তী ভাঙা পাকা রাস্তায় নামা মাত্রই পূর্ব থেকে ওতপেতে থাকা রফিক মিয়া, আমরু মিয়া, মুক্তি মিয়া ও লিটন ওরফে ফকির আলী অতর্কিত হামলা চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র  রামদা,রড ও লাটি দিয়ে পিটিয়ে পুঙ্গ  দুলাল মিয়া (২৮) কে গুরুতর আহত করে। এসময় দুলাল মিয়ার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এগিয়ে এসে হামলাকারীদের কবল থেকে রক্তান্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলার কৈতক হাসপাতালে নিয়ে যান। তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত এর চিহ্ন রয়েছে। মাথার আঘাতে ১৪ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।  আহতের অবস্থায় গুরুতর হওয়ায় কৈতক হাসপাতাল থেকে তাকে পরদিন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন।

এবিষয়ে দুলাল মিয়া বাদী হয়ে রফিক মিয়াকে প্রধান আসামী করে উপরে বর্নিত মুক্তি মিয়া, আমরু মিয়া ও লিটন ওরফে ফকির আলীর নাম উল্লেখ পূর্বক আমল গ্রহনকারী জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত  ছাতক, সুনামগঞ্জে ১৭ ই জুলাই মামলা   দায়ের করেছেন (সি,আর, মামলা নং-২৯১/২০২২ইং (ছাতক)।

এবিষয়ে মামলার বাদী আহত দুলাল মিয়া একান্ত আলাপকালে বলেন, রফিক মিয়া আমার ভাই। সে অর্থলোভী আমরা অর্থাৎ আমি দুলাল, শফিক ও বিল্লাল মাথার ঘাম পায়ে ঝড়িয়ে বিদেশের মাটিতে দিনরাত পরিশ্রম করে রোজগার করে টাকা পাঠিয়েছি। এই টাকা দিয়ে সে তার স্রীর নামে জমি ক্রয় করেছে। গাড়ী ক্রয় করেছে।  লাখ লাখ টাকা সুদে লাগাচ্ছে। আমাদের জন্য কিছু করা দুরে থাক অসুখে-বিসুখে ঔষধ এর টাকাও তার কাছ থেকে পাওয়া কষ্টকর।আমাদের টাকাপয়সার হিসাব-নিকাশ দিতে চায়না। হিসাব চাইলে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। দেশে এসে গাড়ী এক্সিডেন্টে পুঙ্গ হয়ে আছি। বিগত ১০জুলাই দিবাগত রাতে তার সহযোগীদের নিয়ে আমাকে মারপিট করে। ১১ জুলাই রাতে আমি জানমালের নিরাপত্তার চেয়ে ছাতক থানায় অভিযোগ দায়ের করে রাত ১২ টার দিকে সিএনজি গাড়ী যোগে বাড়ী ফেরার পথে রাত ৩ টা ৫০ মিনিটের সময়  আমার বাড়ীর সামনের ভাঙা পাকা রাস্তার উপর নামা মাত্রই রফিক মিয়া, মুক্তি মিয়া, আমরু মিয়া, লিটন ওরফে ফকির আলী রামদা, রড ও লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করতে থাকে   আমার আর্তচিৎকারে পরিবারের অন্য সদস্যরা ও আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে কথিত হামলাকারীদের হাত থেকে আমাকে প্রানে বাঁচান। এবং আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। আমার মাথা সহ সারা শরীরে আঘাত আছে। মাথার আঘাতে ১৪ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে হামলাকারীদের কর্তৃক আমার ভাই শফিক মিয়ার স্ত্রী সাহেনা বেগম  আহত হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে গ্রাম্য সালিসির আশ্রয় নিয়েছি অনেকবার। রফিক মিয়া বিচারে বসত চায়না। জানমালের নিরাপত্তার জন্য ও আমাদের পাওনা পাওয়ার জন্য আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আমি আদালত এর নিকট সুবিচার প্রত্যাশী।