প্রকাশিত: ৮:৪৭ অপরাহ্ণ, জুন ২০, ২০২৫
ইউএস বাংলা বার্তা ডেস্কঃ
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের প্রায় ১০ মাস পেরিয়ে গেলেও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এখনো দেশে ফিরছেন না—এই বিষয়টি ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে কৌতূহল, গুঞ্জন এবং বিশ্লেষণ যেন ক্রমশ বেড়েই চলেছে। বিশেষত লন্ডনে ড. মুহাম্মাদ ইউনূসের সঙ্গে তার বৈঠক ও আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গ সামনে আসার পর, তার দেশে ফেরার সময় ও উদ্দেশ্য নিয়ে জল্পনা নতুন মাত্রা পেয়েছে।
মামলা ও সাজা: আইনি বাধা এখন নেই
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর তারেক রহমান দ্রুতই তার বিরুদ্ধে থাকা একাধিক মামলায় খালাস পান। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাসহ সব গুরুতর অভিযোগ থেকেও তিনি মুক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বিএনপি ও সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। সরকারের পক্ষ থেকেও বলা হয়েছে—তার দেশে ফেরার ক্ষেত্রে আর কোনো আইনগত বাধা নেই।
দেশে ফেরা নিয়ে দলীয় অবস্থান
তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির দুজনই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ২০২৫ সালের মধ্যেই দেশে ফিরবেন এবং নির্বাচনের আগে তা হবে বলেই প্রত্যাশা। হুমায়ুন কবির বলেছেন, ‘২০২৫ সালের মধ্যে তার দেশে ফেরা নিশ্চিত… তবে দিনক্ষণ নির্ভর করছে নির্বাচনের তারিখের ওপর।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও সরাসরি বলেন, ‘বাংলাদেশে যে ওনার প্রয়োজন, দেশের প্রয়োজন, সেটা তিনিও বোঝেন, আমরাও বুঝি। তবে অনেক টেকনিক্যাল দিক রয়েছে।’
নির্বাচন সামনে, তবে নিরাপত্তা একটি বড় বিষয়
দেশে ফিরতে বিলম্বের অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে উঠে এসেছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। হুমায়ুন কবির বলেন, ‘একজন সিনিয়র রাজনৈতিক নেতার নিরাপত্তার উদ্বেগ সবসময়ই থাকবে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার মতো অস্থিতিশীল রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদও মনে করেন, নিরাপত্তা ইস্যুটি হালকাভাবে দেখার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানের ওপর যে আচরণ আগে করা হয়েছে, তা রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলোর অংশগ্রহণেই হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই সংশ্লিষ্ট মহলে একটি প্রতিশোধ-ভীতি থাকতে পারে।’
রাজনৈতিক পরিবেশ ও নির্বাচনের সময়সীমা
লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে তারেক রহমান ও তার দল নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে আলোচনা করেন। সম্ভাব্য সময় হিসেবে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদি নির্বাচনের দিনক্ষণ সরকারিভাবে ঘোষণা হয়, তবে সেটাই তার দেশে ফেরার সময়সূচি নির্ধারণে প্রধান ভূমিকা রাখবে।
ফিরে এসে নেতৃত্ব, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা
বিএনপির বিভিন্ন সূত্রে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তারেক রহমান দেশে ফিরেই নির্বাচনি প্রচারে অংশ নেবেন এবং দল নির্বাচনে জিতে এলে তিনিই হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে বিশ্লেষকরা বলছেন, তারেক রহমানের ফেরাটা কেবল একটি ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি হবে একটি ‘নির্বাচনি শোডাউন।
মহিউদ্দিন আহমদের ভাষায়, ‘উনি তখনই আসবেন, যখন উনার নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, দলের সর্বোচ্চ সমর্থন থাকবে, এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাস্তব সম্ভাবনা তৈরি হবে। তা না হলে এতদিনের স্বেচ্ছানির্বাসন ভেঙে দেশে ফেরার যুক্তি কমে যাবে।’
প্রস্তুতি চলছে
ঢাকায় তারেক রহমানের থাকার জন্য একটি বাড়ি প্রস্তুত করা হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ এসেছে। বাড়িটি ঘিরে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা, যা ফেরার প্রস্তুতিরই ইঙ্গিত দেয়।
তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রশ্নে আইনগত বাধা না থাকলেও নিরাপত্তা, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক পরিবেশ—এই তিনটি প্রধান বিষয় এখনো তার সিদ্ধান্তের পথে প্রভাব ফেলছে। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তিনি অবশ্যই নির্বাচনের আগে ফিরবেন। কিন্তু কবে এবং কীভাবে—সেই বিষয়গুলো এখনো জড়িয়ে আছে রাজনীতির কৌশল, প্রস্তুতি এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের সঙ্গে।
তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন কেবল একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং আগামী নির্বাচনের দিকনির্দেশনা নির্ধারণে এটি হবে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাঁক।সুত্রঃ আমার দেশ অনলাইন
নির্বাহী সম্পাদক ও প্রকাশক – তৌফিকুল আম্বিয়া টিপু
বার্তা সম্পাদক- হুমায়ূন কবীর ফরীদি
উপদেষ্টা: তারিকুল আম্বিয়া অপু
বাংলাদেশ কার্যালয়- কলকলিয়া বাজার, জগন্নাথপুর, সুনামগন্জ।
প্রধান কার্যালয়- ৮২৪ মেইন স্রীট, মেনচেষ্টার, কানেকটিকাট- ০৬০৪০, যুক্তরাষ্ট্র।
ফোনঃ ০১৭১৭৯৩১৬৫৮(বিডি) +১৮৬০৭৯৬৭৮৮৮(ইউএসএ)
ইমেইলঃ usbanglabarta@gmail.com
Design and developed by Web Nest